এসি ছাড়াই ঠান্ডা থাকে লরেঁ ফরনিয়ের ইশকুল বাড়ি

Saheli Mazumdar
November 4, 2024

লরেঁ ফরনিয়ে ফ্রান্স থেকে এসেছিলেন কলকাতায়। উদ্দেশ্য ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্য নিয়ে গবেষণা। কলকাতা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় শহর।তাই এখানে স্থাপত্যের রকমফেরও অগুন্তি। যেমন ঔপনিবেশিক স্থাপত্য , বেঙ্গল রেনেসাঁর সময়কালের স্থাপত্য, আধুনিক সমসাময়িক স্থাপত্য ইত্যাদি। লরেঁ ফরনিয়ে কলকাতার স্থাপত্যের রকমফের দেখে একপ্রকার মজে যান। ঠিক করেন, এই সব কিছুর বাইরে গিয়ে নতুন কিছু করবেন। বছর কয়েকের মধ্যে তিনি কাজ শুরু করেন দেশজ পরিবেশ বান্ধব স্থাপত্য নিয়ে। আচ্ছা আপনি জানেন কি কেমন করে আদিবাসীরা ঘর বানায়? ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ঠিক কোন কোন কায়দায় ছাদ ঢালাই হয়? কেমন করে প্রচণ্ড গরমে ঘর ঠান্ডা রাখা যায়? ফরনিয়ে এসব বিষয় নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চর্চা করছেন। আর হাতে কলমে বানিয়ে ফেলেছেন এমন বহু নমুনা। উত্তরপ্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে পরিবেশবান্ধব একটি বিদ্যালয়ের নির্মাণ তারই একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ। 

গত কয়েক বছরের অসহ্য গরম একেবারে দমবন্ধ  পরিবেশ তৈরি করছে। এসি যারা ব্যবহার করতেন না তারাও এসি লাগিয়েছেন এ বছর। পরিসংখ্যান বলছে,  ২০২৪ সালে এসির ব্যাবসা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০-২৫%। পাশাপাশি আরও একটা জিনিস খেয়াল করার মতো। নভেম্বর মাসেও দেখা নেই শীতের। উধাও শীতের মিঠে রোদ্দুর। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আমাদেরই ক্রিয়াকলাপে বাতাসের গুণমান নষ্ট হচ্ছে । ঠিক তেমনি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। যার সবথেকে বড় প্রভাব বিশ্ব উষ্ণায়ন। আবহাওয়া একেবারে চরম ভাবাপন্ন হয়ে উঠেছে । এই সবকিছু চিন্তা করেই ফরনিয়ে পরিবেশ বান্ধব বিল্ডিং বানানোর পরিকল্পনা শুরু করেন। যেন বাড়ির ভিতরেই প্রকৃতির ছোঁয়া উপভোগ করা যায়।পাশাপাশি বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ব্যাবহার ছাড়াই  ঘর ঠাণ্ডা বা গরম রাখার প্রাকৃতিক উপায়ও তার কাজের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। 

ঠিক এই পরিকল্পনা নিয়েই ফরনিয়ে ২০০২ - ০৩ সালে উত্তরপ্রদেশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি করেন। সুস্থায়ী এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে বিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হয় । তাঁর জন্ম হয় ১৯৬৬ সালে। স্থাপত্যের  প্রতি ফরনিয়ের আগ্রহ বাড়তে শুরু করে তার ১৮তম জন্মদিন থেকে। জন্মদিনে ফরনিয়ে “Shelter” নামের একটি বই উপহার হিসেবে পান। বইটি সেই সময় অত্যন্ত বিখ্যাত হয়েছিল। প্রায় আড়াই লাখ কপি বিক্রি হয়েছিল। মনে করা হয়, এই বইটি  গ্রীন বিল্ডিং রেভেলিউশানের একটা অন্যতম অনুঘটক। বইটি পড়ার পর থেকেই ফরনিয়ে বেশ অনুপ্রাণিত হতে শুরু করেন। এরপর ১৯৯৩ সালে তিনি রোমা রোঁলা স্কলারশিপ পেয়ে কোলকাতায় আসেন পড়াশুনো করতে।  ২০০২ সালে উত্তরপ্রদেশের বিজাউলি গ্রামে স্কুল নির্মানের এই প্রজেক্টটায় কাজ করেন।  স্কুলটি চালু হয় ২০০৩ সালে।  এক বছরের মধ্যেই তিনি তার অভিনব পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দেন। ফরনিয়ে প্রথম থেকেই স্থানীয় জিনিস দিয়েই বিল্ডিংটি বানাতে চেয়েছিলেন। তিনি করেনও তাই। স্থানীয় উপকরণের পাশাপাশি স্থানীয় মিস্ত্রিদেরও এই প্রজেক্টে কাজ করার জন্যে বলেন ফরনিয়ে। বিল্ডিংটির গঠন অন্য আর পাঁচটা বিল্ডিং এর মত না হওয়ায় তাকে বেশ কয়েকজন স্থানীয় দক্ষ শ্রমিকের ওপরেই নির্ভর করতে হয়। ফরনিয়ে জানাচ্ছেন, কোনও জিনিসই সহজাতভাবে পরিবেশবান্ধব নয়। মূলত জিনিসটিকে কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপরেই নির্ভর করে এর পরিবেশগত প্রভাব। ফরনিয়ের মত অনুযায়ী, এই ধরণের পরিবেশ বান্ধব বিল্ডিংগুলির স্থায়িত্ব অনেক বেশি হতে পারে যদি নির্মাতা দক্ষ হন।  তবে অবশ্যই বাড়ির মালিকের জীবনযাপনও এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

২০০২ সালে স্কুলটি নির্মানে খরচ হয়েছিল ৭০,০০০ টাকা। যদিও বিদ্যালয়টির মালিকানা সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত  বিজাউলি গ্রামের একটি পরিবারের কাছেই রয়েছে। এ বিষয়ে উল্লেখ্য স্কুলটি নির্মান হওয়ার সময় যে অর্থ ব্যয় হয়েছিল সেই টাকাও খরচ করেছিল পরিবারটি। স্কুলটিতে মোট ৫ টি শ্রেণীকক্ষ রয়েছে।  তার মধ্যে প্রথম বিল্ডিং এ রয়েছে চারটি ও পরের বিল্ডিং এ রয়েছে একটি। এই পরের বিল্ডিংটি মাত্র ৩ মাসের মধ্যে বানিয়ে ফেলা হয়। 


এই বিদ্যালয়টির গঠনগত ফিচার বেশ অন্যরকম। এটি এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে বৈদ্যুতিক পাখা বা এসি ব্যাবহার না করেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কোন ধরণের বিদেশি বা দামী উপদান ব্যাবহার করা হয়নি এই বিল্ডিংটি বানাতে।  দেশজ গ্রাম্য উপাদান দিয়েই বিল্ডিংটির নির্মাণ হয়েছে। উল্লেখ্য, বিল্ডিংটি বানাতে বেশ কয়েকটি অভিনব কৌশল ব্যাবহার করা হয় সেই সময়ে। যেমন থামের ব্যাবহার, আর্চের ব্যাবহার, বাঁশের সমর্থন, তারজালির ব্যাবহার ইত্যাদি

ভারতের এমন বহু স্থাপত্য রয়েছে যেখানে এই ধরনের কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রথমে বলতেই হয় অজন্তা গুহার কথা।  এই গুহাটি মূলত আগ্নেয়গিরির বেসাল্ট শিলা দিয়ে খোদাই করা। গুহার মোটা শিলাস্তরগুলি ভিতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। গরমকালে গুহার ভেতরের আবহাওয়া শীতল থাকে। শীতকালে ঠিক হয় তার উল্টো,  মানে শীতকালে গুহার ভিতরটি থাকে গরম। এর পাশাপাশি গুহার অবস্থানও ঠিক এমনই যাতে সরাসরি সূর্যালোক না পড়ে । এরফলে গুহার ভিতরে একটি মাইক্রো-ক্লাইমেট তৈরি হয়। অজন্তা গুহার পাশাপাশি তেলেঙ্গানার গোলকন্ডা দুর্গ, রাজস্থানের জন্তর মন্তর, জয়সালমীর ফোর্ট এগুলোও কিন্তু ঠিক একইভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করে। তবে এক্ষেত্রে যে স্থাপত্যের কথা অবশ্যই উল্লেখ করতে হয় সেটি হল মুঘল রাজাদের শহর ফতেহপুর সিক্রির কথা। 

ফতেহপুর সিক্রি বানিয়েছিলেন সম্রাট আকবর। এই স্থাপত্যের নকশাও একেবারে অন্যরকম। মূলত প্রচণ্ড গরমেও এখানের পরিবেশ ঠাণ্ডা থাকে। ফতেহপুর সিক্রি তৈরি করা হয়েছে লাল বেলেপাথর দিয়ে। আসলে বেলে পাথরের কাজ ধীরে ধীরে তাপ শোষণ করা।  এর ফলে দিনের বেলাতে স্থাপত্যের ভিতরের পরিবেশ ঠান্ডা থাকে । আবার রাতে  আস্তে আস্তে তাপ ছেড়ে পরিবেশ গরম হয়। এছাড়া এই ধরনের বিল্ডিং এ বারান্দা এবং জালির ব্যবহার করা হয়।   এতে বায়ুপ্রবাহ আরও সচল হয়। আবার খিলান এবং আর্চ এর ব্যবহারও সরাসরি সূর্যালোক ঢুকতে বাধা দেয়। এই ধরনের স্থাপত্যগুলি এমনভাবেই বানানো হয় যাতে প্রাকৃতিকভাবেই বায়ুচলাচল হতে পারে। 

আর ঠিক এই মডেলকেই কাজে লাগিয়ে ফরনিয়ে বিদ্যালয়টি  নির্মাণ করেন। এই বিল্ডিং এর নিচের তিনদিক পুরোপুরি খোলা। এখানে কোন দরজাও  নেই।  বরং বড় বড় পিলারগুলোই এমনভাবে অবস্থিত যেটা এগারোটা দরজাকে আলাদা করে। বিল্ডিংটির নিচের অংশের থেকে ওপরের অংশ অনেকটা বেশি চাপা। সেক্ষেত্রে প্রত্যেকটা দরজার উপরে একটি করে ইটের জালিও বসানো রয়েছে। এর মূল কারণ,  অবশ্যই যাতে প্রাকৃতিক হাওয়া প্রবেশে কোনও অসুবিধা না হয়। এছাড়াও এই জালিগুলির অন্য আরেকটি সুবিধা হল সরাসরি সূর্যালোক প্রবেশে বাঁধা দেওয়া। আর এর ফলেই গোটা ঘরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে। 

মূলত কোনো বাড়ি বা বিল্ডিং এর তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমেই তার ছাদের তাপ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এখানে ঠিক সেটাই করা হয়েছে। ছাদটি মূলত একটি পাথরের স্ল্যাবের ওপর কাদা এবং গোবরের মিশ্রণ দিয়ে তৈরি। এই ছাদটি গোটা বাড়ির  তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।  গরমকালে বিল্ডিং এর ভিতর গরম হতে দেয়না। আর শীতকালে বাইরের ঠাণ্ডা ভিতরে প্রবেশে বাঁধা দেয়। শুধু ছাদের গঠনই যে এরম অভিনব তা নয়,  এই বিল্ডিং এ সিঁড়ির কাছেই  Wind Catcher / Wind Tower  বানানোর ফলে গোটা ঘরের বায়ু চলাচল হয় অনেকটাই বেশি।  Wind Catcher ঘরের বাতাসকে ঠাণ্ডা করতেও সাহায্য করে। সরাসরি যাতে দেওয়ালে সূর্যের আলো না পড়ে সেই জন্যে আবার ইট এবং পাথর দিয়ে সানসেডও বানানো হয়েছে।  

বিল্ডিংটির তৈরি করতে বাইরের কোন উপাদান ব্যাবহার করা হয়নি। যে সমস্ত জিনিস স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় তাই দিয়েই এই বিল্ডিংটি তৈরি হয়েছে। যেমন, ইট, পাথর, কাদামাটি  ইত্যাদি মূলত ব্যাবহার করা হয়েছে। আসলে স্থানীয় কাজে বাইরের জিনিস ব্যবহার হলেই সেখানে খরচ বেড়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা থাকে।  এর পাশাপাশি স্থানীয় উপাদানের যথাযথ ব্যবহারও হয়না। স্থানীয় জিনিস ব্যাবহারে এলাকার অর্থনীতিও চাঙ্গা হয় ও  পরিবেশের ওপর কুপ্রভাবও অনেকটা কমে।  তবে এই বিল্ডিংটি নির্মাণে যে শুধুমাত্র স্থানীয় জিনিস ব্যাবহার করা হয়েছে তাই নয়, স্থানীয় রাজমিস্ত্রিরাই এই প্রজেক্টে কাজ করেছেন ফরনিয়ের  সঙ্গে। 

ফরনিয়ের তৈরি এই স্কুল বিল্ডিংটি সঠিক উপায়ে  দেশজ জিনিস ব্যাবহার করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ,এই পদ্ধতিটি উষ্ণ শুষ্ক এলাকায় কম খরচে বাড়ি নির্মানের জন্যে একেবারেই যথোপযুক্ত। বর্তমানে নতুন যে ধরণের বাড়ি বানানো হচ্ছে তাতে, যথাযথভাবে হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা থাকে না।  যার ফলে বাড়ির মধ্যেই একটি গুমোট পরিবেশ তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে এই ধরণের পরিবেশ বান্ধব বাড়ি অত্যন্ত সহায়ক। তবে এখানেও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জেস রয়েছে। মূলত গ্রামীণ এলাকার মানুষ চান তাদের জীবনশৈলী খানিকটা হলেও শহরের মতো হোক।  সেক্ষেত্রে তারা তাদের সর্বস্ব সঞ্চয় খরচ করতেও বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেন না। কিন্তু এই নতুন বাড়িগুলির থেকে পরিবেশ বান্ধব বাড়ি বসবাসের জন্যে বেশি সহায়ক সেই বিষয়টি এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। এক্ষেত্রে বিষয়টিকে সাধারণ মানুষের কাছে আনতে  আরও বেশি করে প্রচার করতে হবে। 

লরেঁ ফরনিয়ের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে। তার মধ্যে আশা নিকেতন নামের একটি এনজিওর ধ্যানকক্ষও তিনি বানান পরিবেশবান্ধব উপায়েই। কলকাতায় আসার পর এটি তার প্রথম প্রজেক্ট। ১৯৯৫ সালে তিনি এই ধ্যান কক্ষটি তৈরি করার কাজ শুরু করেন। এই ঘরটি ডিজাইন করতেও তিনি স্থানীয় জিনিসপত্রই ব্যবহার করেন। যেমন ইটের দেওয়াল , টেরাকোটার ছাদ, বড় বড় জানলায় দরমার আস্তরণ ইত্যাদি। দরমা মূলত বাঁশের কচি ও সরু অংশ। একটা একটা বাঁশের অংশের সঙ্গে অপরটা জুড়েই দরমা তৈরি হয়।দরমার গঠন অনেকটা জালের মতো, আর এর ফলে বায়ু চলাচল অনেক বেশি হয় এবং গোটা পরিবেশ আরামদায়ক থাকে।

এছাড়াও ২০০৯ সালে আয়লা ঝড়ের পর ফরনিয়ে সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করার ক্ষমতাসম্পন্ন কিছু বাড়ি বানান। মূলত বাঁশ আর কাদা দিয়েই এই বাড়িগুলি তৈরি হয়। তবে বাড়িগুলিকে আর শক্তপোক্ত করতে বাঁশগুলির কাঠামোর সঙ্গে  স্টিলের রড ও কংক্রিটেরও ব্যবহার করেন তিনি। এই পদ্ধতিকে বলা হয় Columbian joining. ফরনিয়ে এই বাড়িগুলির দেওয়াল আর ছাদ তৈরি করেছেন সরাকাঠি দিয়ে। সবশেষে গোটা বাড়িটি প্লাস্টার করেছেন কাদামাটি দিয়ে। 

ফরনিয়ের আরও একটি উল্লেখযোগ্য কাজ হল বারুইপুরে একটি বাড়ি, “কাঁচা- পাকা” । যেটিও মূলত ঘূর্ণিঝড় সহনশীল। এই প্রজেক্টটি ফরনিয়ে বারুইপুরের এক দম্পতি লাইনাস কেন্ডাল এবং রূপসা নাথের সহযোগিতায় বানান। এই বাড়িটি বানাতেও ফরনিয়ে কাদা এবং বাঁশ ব্যবহার করেছেন। যেখানে ঝড়ের সময় পাকা বাড়ির জানলা ভেঙ্গে যাচ্ছে, বা কোথাও টিনের ছাদ উড়ে যাচ্ছে সেখানে “কাঁচা পাকাতে ” এই ঝড়েও কোনও প্রভাব পড়তেই দেখা যায়নি। এই বাড়িটি স্থানীয় কাঁচা  ও পাকা সামগ্রী ব্যাবহারের এক অপরূপ মেলবন্ধন। এখানে যেমন কংক্রিটের ফ্রেম এবং সিমেন্টের মেঝে রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী বাঁশ, খড় এবং কাদার ব্যবহার। 

ফরনিয়ের প্রতিটি প্রজেক্ট  প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি নান্দনিকতার উৎকৃষ্ট  উদাহরণ । তার কাজের নমুনা পরিবেশ এবং সংস্কৃতি এই দুইয়েরই মেলবন্ধন।  

ভাবার মত প্রশ্ন 

  • উত্তরপ্রদেশের যেই এলাকায় ফরনিয়ে এই স্কুল বিল্ডিংটি বানিয়েছিলেন সেটি ছিল গাঙ্গেয় সমভূমির ওপর। তবে মালভূমি অঞ্চল বা পাহাড়ি তলদেশ ভূমিতে এই ধরণের বিল্ডিং আদৌ বানানো কি আদৌ সম্ভব?  
  • ফরনিয়ে এই বিল্ডিংটি বানিয়েছেন হাওয়ার গতিপ্রকৃতির ওপর ভিত্তি করেই। আগ্রায় মৌসুমি  বায়ু চলাচল করে। তবে যে সমস্ত অঞ্চলে “আঞ্চলিক বায়ু” প্রবাহিত হয় সেখানে এই মডেল কার্যকর হবে কি? 
  • বায়ুপ্রবাহ ছাড়া সূর্যের রশ্মির বিকিরণের ওপর ভিত্তি করেও এই মডেলটির বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে কর্কটক্রান্তি রেখার অবস্থান ভীষণ জরুরি। কর্কটক্রান্তি রেখার নীচে কোনও এলাকা থাকলে সেখানে ছায়া ব্যবহার করে এই মডেলটির বাস্তবায়ন সম্ভব। তবে কর্কটক্রান্তি রেখার ওপরে কোন অঞ্চলের অবস্থান হলে সেখানে কীভাবে এই মডেল বানানো যেতে পারে? 
  • ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা অঞ্চলে কি এই মডেল বানানো সম্ভব? সেক্ষেত্রে বিল্ডিংটি দৃঢ় হবে কি? 

References

Building by nature’s rules - Business Line Report

Primary School in a Village of Uttar Pradesh, India - January 2005 IABSE Symposium Report 89(1), Laurent Fournier

‘Modern buildings cannot breathe’ - Down to Earth Report

Couple’s Solar House Survived a Cyclone. And it’s Made of Mud, Bamboo & Straw! - Better India Report

আরো উদ্যোগের খবর

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram